সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫ - ১৬:০১
স্বামীর কটুক্তি ও গালমন্দের মোকাবিলায় করণীয়

স্বামীর গালমন্দের সম্মুখীন হলে স্ত্রীর উচিত তার ইতিবাচক গুণাবলি চিহ্নিত করে সেগুলোকে শক্তিশালী করা এবং প্রকাশ্যে বলা। ইতিবাচক ও সহায়ক যোগাযোগ গড়ে তোলা উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করবে। লক্ষ্য হলো, কারণ নিয়ে বিচার না করে স্বামীর দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হুজ্জাতুল ইসলাম কারামী স্বামীর গালমন্দের সম্মুখীন হলে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত সে সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, যা নিচে উল্লেখ করা হলো। 

প্রশ্ন: যখন স্বামীর কথাবার্তায় প্রায়শই গালিগালাজ ও অশ্লীলতা থাকে—এমনকি তা এতটাই তীব্র যে তার স্ত্রী ভয়ের কারণে জনসমাগমে চুপ করে থাকেন এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন—তখন কী করা উচিত? 

উত্তর: এক্ষেত্রে এই আচরণের কারণ নিয়ে আলোচনা করা অপ্রয়োজনীয়, কারণ প্রতিটি আচরণেরই একটি মূল কারণ থাকে। এখানে লক্ষ্য হলো সেই কারণ নিয়ে বিচার না করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা। নিচে এমন পরিস্থিতিতে করণীয় কিছু পদক্ষেপ উল্লেখ করা হলো: 

১. ইতিবাচক গুণাবলির প্রতি মনোযোগ দিন
পরিবর্তন শুরু করতে হবে স্ত্রীর নিজের থেকে। অর্থাৎ, স্ত্রীকে চেষ্টা করতে হবে স্বামীর ইতিবাচক গুণাবলি চিহ্নিত করে সেগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রশংসা করা এবং সেগুলো প্রকাশ্যে বলা। 

- উদাহরণ: যদি স্বামী সন্তান বা পরিবারের প্রতি সুরক্ষাপরায়ণ (গোঁড়া নয়) হন, তবে এই গুণটিকে প্রকাশ্যে ও অন্যদের সামনে প্রশংসা করুন। 

- এমন ব্যক্তিদের আবেগ সাধারণত দুটি বিষয়ের সাথে জড়িত: 

  - অন্যদের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন
  - নিকটজনদের অনুভূতির সাথে সামঞ্জস্য

যখন স্বামী অনুভব করবেন যে অন্যদের কাছে তার সম্মান আছে এবং তার স্ত্রী তার ব্যক্তিত্বকে গুরুত্ব দেন, অন্যদের কাছে তার প্রশংসা করেন; তখন এই অনুভূতি ধীরে ধীরে তার আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। 

২. সুস্থ রসিকতা ও আনন্দের পরিবেশ তৈরি করুন
যারা এমন আচরণ করে, তারা প্রায়ই আনন্দ বা রসিকতা প্রকাশের সঠিক পদ্ধতি জানে না। ইসলামেও পরিবারে সুস্থ রসিকতা ও আনন্দের পরিবেশ গড়ে তোলার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। 

- পরিবারে ইতিবাচক রসিকতা ও হালকা মজার পরিবেশ তৈরি করুন। 

- সতর্কতা: রসিকতা কখনোই যেন অপমান বা অবমূল্যায়নের দিকে না যায়। 

- অনেক সময় স্বামী স্ত্রীকে এতটাই নিজের ভাবে মনে করেন যে, তার অপমানজনক আচরণকে ভুলবশত “সামান্য রসিকতা” বলে মনে করেন। এ ক্ষেত্রে তাকে বোঝাতে হবে যে রসিকতা ও অপমানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। 

৩. ধৈর্য্য ও বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রতিক্রিয়া দিন
যারা বাড়িতে এমন আচরণ করে, তারা সাধারণত বন্ধুদের সাথেও একই রকম আচরণ করতে পারে। 

- সরাসরি তর্ক বা উত্তেজনায় না গিয়ে শান্ত ও ধৈর্যশীল থাকুন। 

- স্বামীর কথার মধ্যে যদি কিছু ইতিবাচক দিক থাকে, তবে শুধু সেগুলোকেই গুরুত্ব দিন। 

- লক্ষ্য রাখুন যেন তার ইতিবাচক অনুভূতিগুলো শক্তিশালী হয় এবং ধীরে ধীরে তার মানসিক আঘাত দূর হয়। 

সর্বোপরি:

- এই পরিবর্তন রাতারাতি হবে না, কারণ এমন আচরণ বছরের পর বছর ধরে গড়ে উঠেছে। 

- ধৈর্য্য, সহনশীলতা ও সুস্থ যোগাযোগ এই প্রক্রিয়ার মূল চাবিকাঠি। 

- যদি সমস্যা খুব বেশি তীব্র হয়, তবে পারিবারিক কাউন্সেলিং বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

ইনশাআল্লাহ,  ধৈর্য্য ও সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha